ঢাকা ০৬:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সমবায় সমিতির আইন অমান্য করে চেক সংগ্রহ, পরে দেয়া হচ্ছে মামলা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:০৪:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২
  • ২৫২ বার পড়া হয়েছে

সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ১২ ডিসেম্বরস মবায় সমিতির আইন অমান্য করে সিংগাইরে ঋণ দেয়ার নামে চলছে অলিখিত চেক সংগ্রহ। পরে দেয়া হচ্ছে চেক ডিজঅনার মামলা। এসব সমবায় সমিতির ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে অল্প আয়ের সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, ব্রী কালিয়াকৈর গ্রামের মো: ইদ্রিস আলী গ্রামীন আলো ক্ষুদ্র সমবায় সমিতির নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নেয়। ঋণ পেতে তার কাছ একটি অলিখিত চেক জমা রাখে ওই প্রতিষ্ঠান। ঋণ নেয়ার পর ইদ্রিস আলী ৩ টি কিস্তি পরিশোধ করে। এরপর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ইদ্রিসের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা দেয়া হয়েছে। রবিউল ইসলাম রিটু নামের আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে ওই সমবায় সমিতির মালিকানা দেয়ার প্রলোভনে চেক হাতিয়ে নিয়ে চেক ডিজঅনার মামলা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই সমবায় সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে। রবিউল ইসলাম রিটুকে ওই সমিতির মালিকানা প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে জামানত বাবদ নগদ ৫ লক্ষ টাকা ও অলিখিত চেক নেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আমিনুর ইসলাম। পরে সমিতির মালিকানা না দিয়ে উল্টো ২০ লক্ষ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা করে সমিতির সভাপতি। এছাড়া ভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে চেক সংগ্রহ করে অপর একটি মামলায় নিজেকে পোল্ট্রী এন্ড ডেইরি মেডিসিন ব্যবসায়ী দাবি করে আমজাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির নিকট বাকি বিক্রয়ের অজুহাত দেখিয়ে তার বিরুদ্ধেও ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকার চেক ডিজঅনার মামলা করেন আমিনুর ইসলাম। একইভাবে নিরঞ্জন চন্দ্র বাড়ই নামের আরেক ব্যক্তির বিরুদ্ধেও ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা ধার দিয়েছেন উল্লেখ করে চেক জালিয়াতির মামলা করেন আমিনুর ইসলাম। এভাবে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভিন্ন ভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অলিখিত চেক নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে চেক ডিজঅনার মামলা দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে আমিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন ব্যক্তিকে প্রায় কোটি টাকা ধার দিয়েছেন উল্লেখ করে একের পর এক মামলা করলেও তার এসব টাকার উৎস জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি আমিনুর ইসলাম।

নিজেদের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্হানীয়রা জানান, আমিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস করেনা। তার বিরুদ্ধে কথা বললেই সে বিভিন্ন মামলা দিয়ে মানুষজনকে হয়রানি করে। তবে কখনোই তার পোল্ট্রী এন্ড ডেইরি মেডিসিনের ব্যবসা ছিলনা। সমিতির কার্যালয়ে অল্প কিছু ওষুধ উঠিয়ে নামমাত্র ব্যবসা করে মানুষকে হয়রানি করে। শুনেছি সে অনেকের নামে চেকের মামলা দিয়েছে। যে যে এত টাকা মানুষকে ধার দিয়েছে বলে, এত টাকা সে কোথায় পেল। সে মানুষকে প্রায় কোটি টাকা ধার দিয়েছে এটা বললে পাগলেও বিশ্বাস করবে না।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম রিটু বলেন, আমিনুর আমাকে সমিতির শেয়ার দেয়ার নাম করে জামানত বাবদ আমার কাছ থেকে নগদ টাকা ও চেক নিয়েছে। সেই চেক দিয়ে মিথ্যা মামলা করেছে। আমার মত আরো অনেকের বিরুদ্ধে সে মামলা করেছে। তার কারণে অনেকে নি:স্ব হয়ে গেছে। মোটকথা সে সমবায় সমিতির ব্যবসার আড়ালে মানুষের কাছ থেকে চেক নিয়ে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। এভাবে প্রতারণা করাই এখন তার ব্যবসা।

আরেক ভূক্তভোগী ইদ্রিস আলী বলেন, আমিনুরের সমিতি থেকে আমি ঋণ নিয়েছিলাম, তখন আমার কাছ থেকে জামানত বাবদ ব্ল্যাঙ্ক চেক নিয়েছিল। সেই চেক দিয়ে আমার নামে মিথ্যা চেক জালিয়াতির মামলা দিয়েছে। শুধু আমি না, আমার মত আরো অনেকের বিরুদ্ধেই সে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আমিনুর ইসলাম বলেন, আমি তাদের কাছে ব্যবসায়ীক টাকা পাই। এ বিষয়ে যথেষ্ট স্বাক্ষী প্রমাণ আছে, এলাকার মানুষজনও জানে। উল্টো তারাই আমার নামে মিথ্যা মামলা করেছে। তাদের মামলার স্বাক্ষীরা আমাকে এফিডেভিট করে দিয়েছে যে তারা মিথ্যা মামলা করেছে। আমার ব্যবসা ছিল তার ক্যাশমোমো সহ অন্যান্য ডকুমেন্ট আছে। তাদের কছে টাকা না পেলে কি তারা এমনি এমনি কাগজপত্রে স্বাক্ষর দিয়েছে?

বিষয়টি নিয়ে সিংগাইর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো: আরব আলী বলেন, ওই সমিতিটি মানকগঞ্জ সদর উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশনকৃত। তাই ওই সমিতি সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানিনা। তবে ঋণ দেয়ার সময় ব্ল্যাঙ্ক চেক নেয়ার কোন বিধান নেই।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসলামী সংস্কৃতির প্রচার-প্রসারের অগ্রনায়ক মুফতি রুহুল আমিন মাহমুদী

সমবায় সমিতির আইন অমান্য করে চেক সংগ্রহ, পরে দেয়া হচ্ছে মামলা

আপডেট সময় ১১:০৪:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২

সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ১২ ডিসেম্বরস মবায় সমিতির আইন অমান্য করে সিংগাইরে ঋণ দেয়ার নামে চলছে অলিখিত চেক সংগ্রহ। পরে দেয়া হচ্ছে চেক ডিজঅনার মামলা। এসব সমবায় সমিতির ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে অল্প আয়ের সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, ব্রী কালিয়াকৈর গ্রামের মো: ইদ্রিস আলী গ্রামীন আলো ক্ষুদ্র সমবায় সমিতির নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নেয়। ঋণ পেতে তার কাছ একটি অলিখিত চেক জমা রাখে ওই প্রতিষ্ঠান। ঋণ নেয়ার পর ইদ্রিস আলী ৩ টি কিস্তি পরিশোধ করে। এরপর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ইদ্রিসের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা দেয়া হয়েছে। রবিউল ইসলাম রিটু নামের আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে ওই সমবায় সমিতির মালিকানা দেয়ার প্রলোভনে চেক হাতিয়ে নিয়ে চেক ডিজঅনার মামলা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই সমবায় সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে। রবিউল ইসলাম রিটুকে ওই সমিতির মালিকানা প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে জামানত বাবদ নগদ ৫ লক্ষ টাকা ও অলিখিত চেক নেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আমিনুর ইসলাম। পরে সমিতির মালিকানা না দিয়ে উল্টো ২০ লক্ষ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা করে সমিতির সভাপতি। এছাড়া ভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে চেক সংগ্রহ করে অপর একটি মামলায় নিজেকে পোল্ট্রী এন্ড ডেইরি মেডিসিন ব্যবসায়ী দাবি করে আমজাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির নিকট বাকি বিক্রয়ের অজুহাত দেখিয়ে তার বিরুদ্ধেও ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকার চেক ডিজঅনার মামলা করেন আমিনুর ইসলাম। একইভাবে নিরঞ্জন চন্দ্র বাড়ই নামের আরেক ব্যক্তির বিরুদ্ধেও ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা ধার দিয়েছেন উল্লেখ করে চেক জালিয়াতির মামলা করেন আমিনুর ইসলাম। এভাবে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভিন্ন ভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অলিখিত চেক নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে চেক ডিজঅনার মামলা দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে আমিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন ব্যক্তিকে প্রায় কোটি টাকা ধার দিয়েছেন উল্লেখ করে একের পর এক মামলা করলেও তার এসব টাকার উৎস জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি আমিনুর ইসলাম।

নিজেদের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্হানীয়রা জানান, আমিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস করেনা। তার বিরুদ্ধে কথা বললেই সে বিভিন্ন মামলা দিয়ে মানুষজনকে হয়রানি করে। তবে কখনোই তার পোল্ট্রী এন্ড ডেইরি মেডিসিনের ব্যবসা ছিলনা। সমিতির কার্যালয়ে অল্প কিছু ওষুধ উঠিয়ে নামমাত্র ব্যবসা করে মানুষকে হয়রানি করে। শুনেছি সে অনেকের নামে চেকের মামলা দিয়েছে। যে যে এত টাকা মানুষকে ধার দিয়েছে বলে, এত টাকা সে কোথায় পেল। সে মানুষকে প্রায় কোটি টাকা ধার দিয়েছে এটা বললে পাগলেও বিশ্বাস করবে না।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম রিটু বলেন, আমিনুর আমাকে সমিতির শেয়ার দেয়ার নাম করে জামানত বাবদ আমার কাছ থেকে নগদ টাকা ও চেক নিয়েছে। সেই চেক দিয়ে মিথ্যা মামলা করেছে। আমার মত আরো অনেকের বিরুদ্ধে সে মামলা করেছে। তার কারণে অনেকে নি:স্ব হয়ে গেছে। মোটকথা সে সমবায় সমিতির ব্যবসার আড়ালে মানুষের কাছ থেকে চেক নিয়ে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। এভাবে প্রতারণা করাই এখন তার ব্যবসা।

আরেক ভূক্তভোগী ইদ্রিস আলী বলেন, আমিনুরের সমিতি থেকে আমি ঋণ নিয়েছিলাম, তখন আমার কাছ থেকে জামানত বাবদ ব্ল্যাঙ্ক চেক নিয়েছিল। সেই চেক দিয়ে আমার নামে মিথ্যা চেক জালিয়াতির মামলা দিয়েছে। শুধু আমি না, আমার মত আরো অনেকের বিরুদ্ধেই সে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আমিনুর ইসলাম বলেন, আমি তাদের কাছে ব্যবসায়ীক টাকা পাই। এ বিষয়ে যথেষ্ট স্বাক্ষী প্রমাণ আছে, এলাকার মানুষজনও জানে। উল্টো তারাই আমার নামে মিথ্যা মামলা করেছে। তাদের মামলার স্বাক্ষীরা আমাকে এফিডেভিট করে দিয়েছে যে তারা মিথ্যা মামলা করেছে। আমার ব্যবসা ছিল তার ক্যাশমোমো সহ অন্যান্য ডকুমেন্ট আছে। তাদের কছে টাকা না পেলে কি তারা এমনি এমনি কাগজপত্রে স্বাক্ষর দিয়েছে?

বিষয়টি নিয়ে সিংগাইর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো: আরব আলী বলেন, ওই সমিতিটি মানকগঞ্জ সদর উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশনকৃত। তাই ওই সমিতি সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানিনা। তবে ঋণ দেয়ার সময় ব্ল্যাঙ্ক চেক নেয়ার কোন বিধান নেই।