জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার লক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলার দুইটি আসনে ১২ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে যাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নেতাকর্মীরা কাজ করবেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজবাড়ীতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এবারও আওয়ামী লীগের জয় হবে বলে জানান নেতাকর্মীরা।
রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ নিয়ে সংসদীয় আসন ২০৯। এই আসনে (রাজবাড়ী-১) নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার লক্ষ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজী কেরামত আলী। এছাড়া তার আপন ছোট ভাই রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীও এই আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের লক্ষ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী রুমা মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী মর্জি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ আলী চৌধুরীও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
অপরদিকে রাজবাড়ী-২ আসনে এবারও নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম। এছাড়া এই আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী হক, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ(স্বাচিপ) এর সাবেক সভাপতি ডা. এম ইকবাল আর্সলান,সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক ডেপুটি এটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও নৌকা প্রতীকের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. শেখ রেজাউল ইসলাম। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য।
রাজবাড়ী-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী ১৯৯৩ সালে উপনির্বাচনে প্রথম সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন তিনি। পাঁচবারের এ সংসদ সদস্য ২০১৮ সালের শুরুতে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী (মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ) হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন।
তবে এ আসনে এবার দলীয় মনোনয়ন চাইবেন সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর আপন ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী। দলের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি বলে মনে করেন আওয়ামী লীগসহ সব অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া প্রকাশ্যে সেভাবে প্রচার না চালালেও দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করতে চান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী রুমা। তার বাবা মরহুম অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী চৌধুরী ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ইন্তেকাল করলে উপনির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ কাজী কেরামত আলী নির্বাচিত হন। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহচর ছিলেন। যে কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত নেতার মূল্যায়ন করেন তার মেয়ে সালমা চৌধুরী রুমাকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বানিয়ে। তার ওপর প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি আছে বলেও মনে করেন অনেকেই।
দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশ নিতে চান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার। ছাত্রলীগ করার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে পা রাখা ফকির আবদুল জব্বার এখন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা।
অপরদিকে রাজবাড়ী-২ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫ বার নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে ৪ বার বিজয় লাভ করেছেন। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন তিনি। এবারও তিনি নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেতে এগিয়ে রয়েছেন। এছাড়াও নৌকা প্রতীক পেতে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু।
© ঢাকা পোস্ট