ঢাকা ০৮:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে তিন দফা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অনীহার কারণে প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি। তখন রোহিঙ্গাদের দাবি ছিল, মিয়ানমার সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।

যে পথে এসেছিলেন, সে পথেই মিয়ানমারে ফিরতে চান কেফায়েত উল্লাহরা

কক্সবাজার শহর থেকে ৭৬ কিলোমিটার দূরে উখিয়ার জামতলী (ক্যাম্প-১৮) আশ্রয়শিবির। আজ রোববার সকাল থেকে রোহিঙ্গারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল মাঠে ‘বাড়ি চলো’ প্রচারণা সমাবেশে যোগ দিতে। কিন্তু বাদ সাধে বৃষ্টি। এর মধ্যে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাস্তায় বের হন আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা কেফায়েত উল্লাহ (৬০)। সঙ্গে তাঁর দুই ছেলে রহমত উল্লাহ (২৫) ও আজম উল্লাহ (২০)। হাতে একটি প্রচারপত্র, তাতে লেখা, ‘চলো বাড়ি চলো’।

 

কেফায়েত উল্লাহ বললেন, জামতলী পাহাড়ের আশ্রয়শিবিরে ছোট্ট ত্রিপলের ছাউনিতে কখন যে পাঁচ বছর কেটে গেল, টেরই পাননি। তাঁরা কখন আরাকানে (রাখাইন রাজ্যে) ফিরতে পারবেন, তারও নিশ্চয়তা নেই। তাঁরা দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান। বিশ্ববাসীকে এই দাবি জানানোর জন্য ‘বাড়ি চলো’ প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন উল্লেখ করে কেফায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আমরা যে পথে বাংলাদেশে এসেছিলাম, সে পথেই ফিরতে চাই মিয়ানমারে।’

কেফায়েত উল্লাহর বাড়ি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের সিকদারপাড়ায়। ২০১৭ সালে ২৫ আগস্টের পর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন-হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়। এর চার দিন পর ২৯ আগস্ট রাতে স্ত্রী ও পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে নাফ নদী অতিক্রম করে টেকনাফে পালিয়ে আসেন। সেখান থেকে ঠাঁই হয় উখিয়ার এই আশ্রয়শিবিরে।
কেফায়েত উল্লাহর মতো কয়েক হাজার রোহিঙ্গা রোববার জামতলীর সিমকার্ড মাঠ এলাকার সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু, ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা সম্পত্তি ফেরতসহ সাত দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।

মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এভাবেই বাংলাদেশে আসেন রোহিঙ্গারা

মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এভাবেই বাংলাদেশে আসেন রোহিঙ্গারা
ফাইল ছবি

উখিয়ার লাম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরেও প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গার পৃথক সমাবেশ হয়েছে। তা ছাড়া উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরের সব কটিতে ছোট ছোট ৩০টির বেশি সমাবেশ করে জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়ার দাবি জানায় রোহিঙ্গারা।

গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে তিন দফা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অনীহার কারণে প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি। তখন রোহিঙ্গাদের দাবি ছিল, মিয়ানমার সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।

লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের সমাবেশে কথা হয় ‘বাড়ি চলো’ প্রচারণা আয়োজকদের একজন মো. ওসমানের (৫৪) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই দেশে আশ্রিত, এটি আমাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা নয়। দিন যত বাড়ছে, সমস্যা তত প্রকট হচ্ছে। কিন্তু আমরা এখানে (বাংলাদেশে) থাকতে চাই না। আমরা নিজের অধিকার নিয়ে দ্রুত মিয়ানমারে ফেরত যেতে চাই। তাই ‘‘বাড়ি চলো’’ আন্দোলন।’

জনপ্রিয় সংবাদ

ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় আওয়ামীলীগ নেতার দরিদ্রদের মাঝেশাড়ী ও লুঙ্গী বিতরণ

গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে তিন দফা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অনীহার কারণে প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি। তখন রোহিঙ্গাদের দাবি ছিল, মিয়ানমার সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।

যে পথে এসেছিলেন, সে পথেই মিয়ানমারে ফিরতে চান কেফায়েত উল্লাহরা

আপডেট সময় ০৮:৫১:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০২২

কক্সবাজার শহর থেকে ৭৬ কিলোমিটার দূরে উখিয়ার জামতলী (ক্যাম্প-১৮) আশ্রয়শিবির। আজ রোববার সকাল থেকে রোহিঙ্গারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল মাঠে ‘বাড়ি চলো’ প্রচারণা সমাবেশে যোগ দিতে। কিন্তু বাদ সাধে বৃষ্টি। এর মধ্যে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাস্তায় বের হন আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা কেফায়েত উল্লাহ (৬০)। সঙ্গে তাঁর দুই ছেলে রহমত উল্লাহ (২৫) ও আজম উল্লাহ (২০)। হাতে একটি প্রচারপত্র, তাতে লেখা, ‘চলো বাড়ি চলো’।

 

কেফায়েত উল্লাহ বললেন, জামতলী পাহাড়ের আশ্রয়শিবিরে ছোট্ট ত্রিপলের ছাউনিতে কখন যে পাঁচ বছর কেটে গেল, টেরই পাননি। তাঁরা কখন আরাকানে (রাখাইন রাজ্যে) ফিরতে পারবেন, তারও নিশ্চয়তা নেই। তাঁরা দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান। বিশ্ববাসীকে এই দাবি জানানোর জন্য ‘বাড়ি চলো’ প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন উল্লেখ করে কেফায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আমরা যে পথে বাংলাদেশে এসেছিলাম, সে পথেই ফিরতে চাই মিয়ানমারে।’

কেফায়েত উল্লাহর বাড়ি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের সিকদারপাড়ায়। ২০১৭ সালে ২৫ আগস্টের পর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন-হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়। এর চার দিন পর ২৯ আগস্ট রাতে স্ত্রী ও পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে নাফ নদী অতিক্রম করে টেকনাফে পালিয়ে আসেন। সেখান থেকে ঠাঁই হয় উখিয়ার এই আশ্রয়শিবিরে।
কেফায়েত উল্লাহর মতো কয়েক হাজার রোহিঙ্গা রোববার জামতলীর সিমকার্ড মাঠ এলাকার সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু, ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা সম্পত্তি ফেরতসহ সাত দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।

মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এভাবেই বাংলাদেশে আসেন রোহিঙ্গারা

মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এভাবেই বাংলাদেশে আসেন রোহিঙ্গারা
ফাইল ছবি

উখিয়ার লাম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরেও প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গার পৃথক সমাবেশ হয়েছে। তা ছাড়া উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরের সব কটিতে ছোট ছোট ৩০টির বেশি সমাবেশ করে জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়ার দাবি জানায় রোহিঙ্গারা।

গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে তিন দফা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অনীহার কারণে প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি। তখন রোহিঙ্গাদের দাবি ছিল, মিয়ানমার সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।

লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের সমাবেশে কথা হয় ‘বাড়ি চলো’ প্রচারণা আয়োজকদের একজন মো. ওসমানের (৫৪) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই দেশে আশ্রিত, এটি আমাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা নয়। দিন যত বাড়ছে, সমস্যা তত প্রকট হচ্ছে। কিন্তু আমরা এখানে (বাংলাদেশে) থাকতে চাই না। আমরা নিজের অধিকার নিয়ে দ্রুত মিয়ানমারে ফেরত যেতে চাই। তাই ‘‘বাড়ি চলো’’ আন্দোলন।’