ঢাকা ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার নামে নৈরাজ্যতা-শারমিন রেজা লোটাশ

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৭:০৬:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১৭৬ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। পৃথিবীর যে জাতি যতো বেশি শিক্ষিত সে জাতি ততো বেশি উন্নত। শিক্ষাই পারে ব্যক্তির অন্তর্নিহিত গুণাবলির বিকাশ ঘটিয়ে প্রকৃত মানুষ তথা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে। আর এ জন্য চাই মানসম্মত ও উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা। কারণ মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমেই আমরা কেবল শিক্ষার ভালো মান আশা করতে পারি। বর্তমান যুগ বিশ্বায়নের যুগ এ যুগে পৃথিবী তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা প্রযুক্তি নির্ভর বা কারিগরি মাধ্যমে নয়। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। যেমন-

ক. বাংলা মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা
খ. ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা
গ. মাদ্রাসা মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা (আলীয়া মাদ্রাসা ও কাওমী মাদ্রাসা)

এর সাথে নতুন একটি অধ্যায় যুক্ত হয়েছে শিক্ষা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার নামে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্ডার গার্টেন থেকে শুরু করে বেসরকারি বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়। যদিও শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি বলেছেন শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা কাম্য নয়। একজন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীর প্রতি মাসে বেতন পরিশোধ করতে হয় ১৬৫০/- (এক হাজার ছয়শত পঞ্চাশ) টাকা ভর্তি ফি ৬ হাজার টাকা এ ছাড়া পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষা সমাপনীকে কেন্দ্র করে কোচিং ব্যবসায় মেতে উঠেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো মাসিক বেতনের সাথে হাতিয়ে নিচ্ছেন আরো ২০০ টাকা। এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েও অভিভাব করা কোচিংয়ের রাহু থেকে মুক্ত করতে পারছেন না। শিক্ষার্থীদের ভর্তি হবার পূর্বেই বলা থাকে কোচিং বাধ্যতামূলক। বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল গুলোতে গলা কাটা ভর্তি ফি ও মাসিক বেতন দিতে হচ্ছে। আমাদের মতো মধ্যবৃত্ত পরিবারদের। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গভেষণা ইনষ্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে পাদানের নামে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই শুধু অনৈতিক তাই নয় পাপ ও। এসব মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে কঠোরভাবে এর ওপরে নজর রাখা উচিত। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রতিষ্ঠান গুলো যাতে অর্থ আদায় করতে না পারে একই সঙ্গে যাতে সঠিক পদ্ধতিতে পাঠদান করানো হয় সেই দিকে লক্ষ রেখে মনিটর করতে হবে শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে। এছাড়া ভূয়া সাটিফিকেট বিক্রিসহ বিভিন্ন ভাবে শিক্ষা নিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিগত ২ বছর আগে রাজধানীর মালিবাগ অবস্থিত আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভাসিটি অবৈধ ক্যাম্পাস থেকে বিপুল পরিমানে ভূয়া সাটিফিকেট সহ দুজন কে আটক করে র‌্যাব। অভিযোগ রয়েছে রাজধানীতে এমন ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এসব ক্যাম্পসে ভূয়া সাটিফিকেট ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন শিক্ষা ব্যবসায়িরা। ফলে যেমন কমেছে শিক্ষার মান। তেমনি বাড়ছে নামমাত্র সনদ হাতে শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা। এই সাথে বাড়ছে যুবক সমাজে নেশার সংখ্যা বেকারত্বর হতাশা থেকে নেশার জগতে ডুবে যাচ্ছে অনেক শিক্ষিত বেকার যৃুবকরা। এই ভাবেই বেড়ে যাচ্ছে সমাজে নানান ধরণের অপরাধ মূলক অপকর্ম। আমরা মধ্যবৃত্ত পরিবার গুলো বড্ড অসহায়। এই ব্যবসাধারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে। একজন রিক্সা চালকের পক্ষে সম্ভব না ৩ টা সন্তানকে একসাথে স্কুলে ভর্তি করা। রিক্সাচালকটি তখন তার ছেলে সন্ত্রানকে স্কুলে ভর্তি করবে আর মেয়ে সন্ত্রানকে ১৩ বছর হতেই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে বাবা মা। এর ফলে বেড়ে যাচ্ছে বাল্য বিবাহ।

শিক্ষা হচ্ছে একটি জাতির মেরুদন্ড। কাজেই সেই মেরুদন্ড যাতে কেউ ভেঙে ফেলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্রিটিশ আদলে তৈরি। কাজেই এই শিক্ষা ব্যবস্থা একজন শিক্ষার্থীর জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা বিধান করতে পারছে না। শিক্ষা ব্যবস্থা এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে যাতে শিক্ষাজীবন শেষে একজন শিক্ষার্থী নিজেই তার উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নিতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুর-১ আসনে আ.লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য আব্দুর রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল

শিক্ষার নামে নৈরাজ্যতা-শারমিন রেজা লোটাশ

আপডেট সময় ০৭:০৬:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। পৃথিবীর যে জাতি যতো বেশি শিক্ষিত সে জাতি ততো বেশি উন্নত। শিক্ষাই পারে ব্যক্তির অন্তর্নিহিত গুণাবলির বিকাশ ঘটিয়ে প্রকৃত মানুষ তথা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে। আর এ জন্য চাই মানসম্মত ও উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা। কারণ মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমেই আমরা কেবল শিক্ষার ভালো মান আশা করতে পারি। বর্তমান যুগ বিশ্বায়নের যুগ এ যুগে পৃথিবী তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা প্রযুক্তি নির্ভর বা কারিগরি মাধ্যমে নয়। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। যেমন-

ক. বাংলা মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা
খ. ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা
গ. মাদ্রাসা মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা (আলীয়া মাদ্রাসা ও কাওমী মাদ্রাসা)

এর সাথে নতুন একটি অধ্যায় যুক্ত হয়েছে শিক্ষা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার নামে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্ডার গার্টেন থেকে শুরু করে বেসরকারি বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়। যদিও শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি বলেছেন শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা কাম্য নয়। একজন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীর প্রতি মাসে বেতন পরিশোধ করতে হয় ১৬৫০/- (এক হাজার ছয়শত পঞ্চাশ) টাকা ভর্তি ফি ৬ হাজার টাকা এ ছাড়া পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষা সমাপনীকে কেন্দ্র করে কোচিং ব্যবসায় মেতে উঠেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো মাসিক বেতনের সাথে হাতিয়ে নিচ্ছেন আরো ২০০ টাকা। এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েও অভিভাব করা কোচিংয়ের রাহু থেকে মুক্ত করতে পারছেন না। শিক্ষার্থীদের ভর্তি হবার পূর্বেই বলা থাকে কোচিং বাধ্যতামূলক। বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল গুলোতে গলা কাটা ভর্তি ফি ও মাসিক বেতন দিতে হচ্ছে। আমাদের মতো মধ্যবৃত্ত পরিবারদের। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গভেষণা ইনষ্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে পাদানের নামে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই শুধু অনৈতিক তাই নয় পাপ ও। এসব মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে কঠোরভাবে এর ওপরে নজর রাখা উচিত। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রতিষ্ঠান গুলো যাতে অর্থ আদায় করতে না পারে একই সঙ্গে যাতে সঠিক পদ্ধতিতে পাঠদান করানো হয় সেই দিকে লক্ষ রেখে মনিটর করতে হবে শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে। এছাড়া ভূয়া সাটিফিকেট বিক্রিসহ বিভিন্ন ভাবে শিক্ষা নিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিগত ২ বছর আগে রাজধানীর মালিবাগ অবস্থিত আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভাসিটি অবৈধ ক্যাম্পাস থেকে বিপুল পরিমানে ভূয়া সাটিফিকেট সহ দুজন কে আটক করে র‌্যাব। অভিযোগ রয়েছে রাজধানীতে এমন ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এসব ক্যাম্পসে ভূয়া সাটিফিকেট ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন শিক্ষা ব্যবসায়িরা। ফলে যেমন কমেছে শিক্ষার মান। তেমনি বাড়ছে নামমাত্র সনদ হাতে শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা। এই সাথে বাড়ছে যুবক সমাজে নেশার সংখ্যা বেকারত্বর হতাশা থেকে নেশার জগতে ডুবে যাচ্ছে অনেক শিক্ষিত বেকার যৃুবকরা। এই ভাবেই বেড়ে যাচ্ছে সমাজে নানান ধরণের অপরাধ মূলক অপকর্ম। আমরা মধ্যবৃত্ত পরিবার গুলো বড্ড অসহায়। এই ব্যবসাধারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে। একজন রিক্সা চালকের পক্ষে সম্ভব না ৩ টা সন্তানকে একসাথে স্কুলে ভর্তি করা। রিক্সাচালকটি তখন তার ছেলে সন্ত্রানকে স্কুলে ভর্তি করবে আর মেয়ে সন্ত্রানকে ১৩ বছর হতেই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে বাবা মা। এর ফলে বেড়ে যাচ্ছে বাল্য বিবাহ।

শিক্ষা হচ্ছে একটি জাতির মেরুদন্ড। কাজেই সেই মেরুদন্ড যাতে কেউ ভেঙে ফেলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্রিটিশ আদলে তৈরি। কাজেই এই শিক্ষা ব্যবস্থা একজন শিক্ষার্থীর জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা বিধান করতে পারছে না। শিক্ষা ব্যবস্থা এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে যাতে শিক্ষাজীবন শেষে একজন শিক্ষার্থী নিজেই তার উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নিতে পারে।